বিবর্তন নাকি প্রহসন ?

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ মুজিবুল হক ২৩ আগস্ট, ২০১৮, ১১:১০:৫৩ রাত

১৯৮৮ সালে আমার বাবা কোরবানী দেয়ার জন্য গরু কিনেছিলেন ৮ হাজার টাকা দিয়ে, তখন মধ্যবিত্ত বা উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবার এই মূল্যের গরু দিয়েই কোরবানী করতেন ..

কোরবানীর দিন ঐ গরুর চামড়া বিক্রয় হলো ১ হাজার ৮ শত টাকায় ..

ঐ সময়ে একজোড়া খাঁটি চামড়ার "বাটা" স্যান্ডেলের মূল্য ছিল ১৪০ টাকা ..

আমাদের খুব ফেভারিট ছিল ঐ স্যান্ডেলগুলো..

বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দিন দিন চামড়ার চাহিদা আরো বাড়তে লাগলো আর টাকার মানে চামড়ার মুল্য পতন তখন হতেই শুরু ..

বাংলাদেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে .

সারা বিশ্বে চামড়ার মুল্য ও চাহিদা বেড়েছে ...

১৯৮৮ সালে ১৫ হাজার টাকায় যে গরু পাওয়া যেত ঠিক সেই সাইজের গরু এবছর আমরা কিনেছি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ..

১৯৮৮ সালে "বাটা" কোম্পানীর যে স্যান্ডেল ছিল ১৪০ টাকা ডিজাইন পাল্টে বরং চামড়া আরো কম পরিমান ব্যবহার করে সেই স্যান্ডেলের মূল্য এখন ৮০০ টাকা ! এক জোড়া "বাটা" বা "এপেক্স" সু'র মূল্য মাত্র সাড়ে ৩ হাজার টাকা ..

আর এবছর আমাদের কোরবানীর গরুর চামড়া বিক্রয় হয়েছে ৩০০ টাকায় !

একটি বড় গরুর চামড়া দিয়ে কমপক্ষে ১৫ জোড়া স্যান্ডেল তৈরী করা সম্ভব ..

কাঠের জায়গায় প্লাস্টিক, স্টিলের জায়গায় লোহা, ভাতের বদলে নুডলস অথবা ফাস্টফুডে আগ্রহ বাড়লেও চামড়ার তৈরি সামগ্রীর প্রতি মানুষের চাহিদা কমেনি বরং দিন দিন বেড়েছে . আর বিশ্বব্যাপী চামড়াশিল্পে বিনিয়োগ হয়েছে বিগত ৩০ বছরের তুলনায় কয়েক গুন বেশী ...

১ লাখ টাকার গরুর চামড়ার মূল্য তো কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা হবার কথা !

তবে লাখ টাকার প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশে ঈদুল আযহা ও অন্যান্য সময় চামড়ার এত মুল্যপতন কেন ?

আমাদের করনীয় :-

মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ও রহমতে হয়তো এবারের কোরবানীই আপনার ও আমার শেষ কোরবানী নয়, আল্লাহর ইচ্ছা হলে আগামী বছর আপনি ও আমি এবারের চেয়ে বড় গরু কোরবানী দিতে পারি, তবে এবারের কোরবানী তাদের জন্যই শেষ কোরবানী হোক যারা গরীবের হক মেরে নিজেদের পকেট ভারী করছে ..

আগামী বছর যদি আল্লাহ আপনাকে ও আমাকে বাঁচিয়ে রাখে এবং লাখ টাকার কোরবানীর গরুর চামড়ার মূল্য যদি কমপক্ষে ২ হাজার টাকা পাওয়া না যায় তাহলে ঐ চামড়া আমরা মাটিতে পুঁতে ফেলব এবং ২ হাজার টাকা নিজের গাঁট থেকে গরীবদের দিয়ে দেবো ..

যদি আমরা ১ লাখ টাকা দিয়ে গরু কিনে ৫ হাজার টাকা হাসিল দিতে পারি তাহলে আর ২ হাজার টাকার কষ্ট নাহয় স্বীকার করে নিলাম ..

এতে চামড়া নিয়ে কারসাজি যারা করে তাদের মাথায় হাত অবশ্যই পড়বে ...

বিষয়: বিবিধ

৬১৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385803
২৪ আগস্ট ২০১৮ সকাল ১১:৪৮
হতভাগা লিখেছেন : বাংলাদেশীরা ব্যবসা খুব বেশী বুঝে আর সেজন্যই তো দেশের এই অবস্থা। এরা সিন্ডিকেট করে সব কিছুর দাম বাড়িয়ে দেয় । এবং সরকারও এদেরকে কিছু বলে না কারণ এদের থেকে তারা নিয়মিত চাঁদা পায়।

আপনার প্রস্তাব আমার কাছে পছণ্দ হয়েছে কিন্তু সমস্যা হল আমার সাথে যারা ভাগে আছে তারা কি সেটা হতে দেবে? একেক জনের একে রকমের মেন্টালিটি থাকে। চামড়া এতিমখানায় দিয়ে দিলে তাদের কিভাবে উপকার হয় সে বিষয়টি নিয়েই চিন্তা করা উচিত। কারণ যে চামড়া তারা আপনার কাছ থেকে কিনেছে ৪০০ টাকায় সেই চামড়া দিয়ে সে বানাচ্ছে ১০ টি জুতা যার এক একটার তাম মিনিমাম ২০০০ টাকা। মানে ৪০০ টাকায় জিনিস কিনে সে ২০০০০ টাকায় বেচলো , ৫০ গুণ লাভ! খরচা পাতি ধরলে সেটা কমালেও তো ২৫ গুন লাভ থেকেই যাবে। ইসলাম কি এরকমভাবে ব্যবসা করতে বলে আমাদের?
385808
২৫ আগস্ট ২০১৮ সকাল ০৫:০৭
শেখের পোলা লিখেছেন : যুক্তি মন্দ নয়, তবে তা নষ্ট করলে গোনাহ হবার সম্ভাবনা থেকে যাবে। তাই অন্য কিছু ভাবুন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File